মাটির রাস্তায় চিকন টায়ারের দাগ স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। বৃষ্টির ফোঁটা সূচের মত গায়ে বিঁধছে এখন। একটু আগেও স্বাস্থ্যবান বৃষ্টির ফোঁটা ধরনীর বুক কাপাচ্ছিল। সবকিছু দূরে সরে যাচ্ছে দেখে সে ভ্যান চালকের পাশে গিয়ে সামনে তাকিয়ে বসল। এবার সবকিছু তার কাছে আসছে। ভ্যান চালক আর যাত্রী দু'জনই কাকভেজা।
সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে প্রায়। পাখিরা আজ অনেক আগেই নীড়ে ফিরেছে। রাস্তার পাশে কিছু ব্যাঙ ছাড়া আর আশেপাশে কোনো প্রাণী নেই। চায়ের দোকানগুলোও বন্ধ। হয়ত আজ ওগুলো খুলেও নি। কি আশ্চর্য! ঝিঁঝিঁ পোকারাও ডাকছে না। কেমন গুমোট একটা পরিবেশ।
খানিক দূরে বড় অশ্বত্থ গাছের নিচে একটা আলো জ্বলছিল। কাছে যেতে বোঝা গেল একটা চায়ের দোকান। দোকানী তার দোকান বন্ধ করছিল। করিম মিয়া বাড়ি যাও? দোকানী জিজ্ঞাসা করে। ভ্যান চালক করিম মিয়া ব্রেক চেপে দাড়িয়ে যায়। উত্তর দেয়: হু, আইজ ফিরা আওনের প্যাসেঞ্জার পাই নাই। উডেন।
গাছের উপর থেকে সে তাদের চলে যাওয়া দেখে। যেন অনন্তকাল ধরে ভ্যান চালিয়ে যাচ্ছে করিম মিয়া। ঝাপসা হয়ে আসে ভ্যান টি। সূর্য তখন ডুবে গেছে। বৃষ্টির ফোঁটা অবিরত ঝরছে।